_সৃষ্টিশীলতা যেনো থেমে না যায়
শিক্ষার আলো যাঁদের মেধা-মননে, এমন বিদগ্ধ ক’জনকে একদিন খেয়ালের বশে জিজ্ঞেস করলাম। ‘বাংলা সাহিত্যের পাঁচজন লেখকের নাম বলুন’ প্রশ্নটি নিছক হালকা এবং শ্লেষমিশ্রিত ভেবে তাঁরা আমার দিকে গুরুগম্ভীর দৃষ্টিতে তাকালেন। পরে সবিনয়েই জানতে চাইলাম। অনেকটা পণ্ডিত্যের ঢঙে উত্তর দিলেন- রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জসীমউদ্দীন, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিম। দু’একজনের মুখ থেকে রকমফেরে বের হয়ে এলো- সুকান্ত, সফিয়া কামাল, আলী আহসানের নাম। তবে কেউই অগ্রজ কালোত্তীর্ণ এসব লেখকের পূর্ণ নাম কিংবা অর্জিত পদবী ব্যবহার করলেন না।
এটি সেই আশির দশকের ঘটনা। সেদিন প্রশ্নটি রসালাপের খোরাক হিসেবে আড্ডা জমানো বাহন হলেও পরবর্তীতে আমার মনে গভীর রেখাপাত করে। আমি এ নিয়ে জমকালো একটা জরিপ চালানোর কাজে একা একাই নেমে পড়ি। কৌতুহল নিবৃত্ত করতেই নবীন লেখক থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত যাঁকেই পেয়েছি শতো আলোচনার মাঝেও কৌশলে প্রশ্নটি করেছি।
তো প্রকাশনার সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততার এ বছর নিয়ে ৩৩ বছর পেড়িয়ে গেলো। অন্তত এ পায় তিন যুগের সময় আমি অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এই একটি প্রশ্নকে যেমন সযতেœ লালন করেছি তেমনি উত্তর নিয়েছি কম করে হলেও হাজার বিশেক লেখক-লেখিকার কাছ থেকে।
দীর্ঘ এ জরিপের উপাত্তে যা পেয়েছি তা হলো পাঁচজন লেখকের নাম বলতে, ঘুরে ফিরে সবাই ঐ কয়েকজনের নামই ব্যবহার করেছেন। প্রশ্নটির সঙ্গে আধুনিক জুড়ে দেয়ার পর অনেক কষ্টে ‘হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলনের নাম বলতে শুনেছি কয়েকজনকে’।
আসলে এতো কিছুর অবতারণা এ কারণে যে, বিষয়টিতে আমি নিজেও বিস্ময়ে হতবাক হয়েছি। যাঁদের নাম বলা হয়েছে, সেই সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিকগণ প্রয়াত হয়েছেন অনেকদিন আগে। স্বভাবতই তাঁদের সৃষ্টিশীলতা থেমে গেছে। তাঁরা আজ স্বরণীয় বরণীয়দের তালিকায়। কিন্তু থেমে যায়নি বাংলার সাহিত্যাকাশ। সেখানে টগবগ করে ফুটছে নতুন নতুন লেখক-লেখিকারা। তাঁদের দীর্ঘ নামের তালিকা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। প্রকাশিত হচ্ছে অগণিত বই, সেই সাথে প্রকাশনা মাধ্যম যেনো আজ চাঁদের হাট।
অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমরা জীবনঘনিষ্ঠ ও সৃষ্টিশীল লেখকের খুবএকটা সান্নিধ্য পাইনি। পাইনি প্রয়াত সেই সব লেখকদের অনুরূপ কাউকে। যে কারণে ঘুরেফিরে এখনও কয়েকটি নামই সবার মুখে মুখে।
শ্রদ্ধা থাকবে, আন্তরিকাতা থাকবে, থাকবে অগ্রজদের প্রতি নিরবচ্ছিন্ন ভালোবাসা। তারাই পাবে সস্মানের শ্রেষ্ঠ মকুটটি। এ ব্যাপারে কারো সাথেই আমার দ্বি-মত নেই।
তবে বেরিয়ে আসবেন না, শুন্যতার সামান্যতম পূর্ণতা পাবে না, আমরা পাবো না জ্বল জ্বলে উজ্জল কোনো লেখককে, যার আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত হবো আমরা, সেই সাথে অনাগত প্রজন্ম- এ কেমন কথা?
ফেনানো প্যাচাল হলেও আমি বলতে চাই- আমরা পরিবর্তনে বিশ্বাসী, অবশ্যই তা অগ্রজদেরকে সাথে করে। সেই সাথে চাই- জীবনঘনিষ্ঠ, কালোত্তীর্ণ সৃষ্টিশীল একাধিক লেখক-লেখিকার সফল অনুপ্রবেশ। কিছুই না পারলেও আমার প্রকাশনা সংস্থা ‘মুন্নী প্রকাশন’ এ ব্যাপারে সহায়তার হাত প্রসারিত রাখবে সব ধরনের সীমাবদ্ধতা ডিঙ্গিয়ে।
মোবারক হোসেন
প্রধান নির্বাহী
মুন্নী প্রকাশন
এটি সেই আশির দশকের ঘটনা। সেদিন প্রশ্নটি রসালাপের খোরাক হিসেবে আড্ডা জমানো বাহন হলেও পরবর্তীতে আমার মনে গভীর রেখাপাত করে। আমি এ নিয়ে জমকালো একটা জরিপ চালানোর কাজে একা একাই নেমে পড়ি। কৌতুহল নিবৃত্ত করতেই নবীন লেখক থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত যাঁকেই পেয়েছি শতো আলোচনার মাঝেও কৌশলে প্রশ্নটি করেছি।
তো প্রকাশনার সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততার এ বছর নিয়ে ৩৩ বছর পেড়িয়ে গেলো। অন্তত এ পায় তিন যুগের সময় আমি অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এই একটি প্রশ্নকে যেমন সযতেœ লালন করেছি তেমনি উত্তর নিয়েছি কম করে হলেও হাজার বিশেক লেখক-লেখিকার কাছ থেকে।
দীর্ঘ এ জরিপের উপাত্তে যা পেয়েছি তা হলো পাঁচজন লেখকের নাম বলতে, ঘুরে ফিরে সবাই ঐ কয়েকজনের নামই ব্যবহার করেছেন। প্রশ্নটির সঙ্গে আধুনিক জুড়ে দেয়ার পর অনেক কষ্টে ‘হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলনের নাম বলতে শুনেছি কয়েকজনকে’।
আসলে এতো কিছুর অবতারণা এ কারণে যে, বিষয়টিতে আমি নিজেও বিস্ময়ে হতবাক হয়েছি। যাঁদের নাম বলা হয়েছে, সেই সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিকগণ প্রয়াত হয়েছেন অনেকদিন আগে। স্বভাবতই তাঁদের সৃষ্টিশীলতা থেমে গেছে। তাঁরা আজ স্বরণীয় বরণীয়দের তালিকায়। কিন্তু থেমে যায়নি বাংলার সাহিত্যাকাশ। সেখানে টগবগ করে ফুটছে নতুন নতুন লেখক-লেখিকারা। তাঁদের দীর্ঘ নামের তালিকা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। প্রকাশিত হচ্ছে অগণিত বই, সেই সাথে প্রকাশনা মাধ্যম যেনো আজ চাঁদের হাট।
অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমরা জীবনঘনিষ্ঠ ও সৃষ্টিশীল লেখকের খুবএকটা সান্নিধ্য পাইনি। পাইনি প্রয়াত সেই সব লেখকদের অনুরূপ কাউকে। যে কারণে ঘুরেফিরে এখনও কয়েকটি নামই সবার মুখে মুখে।
শ্রদ্ধা থাকবে, আন্তরিকাতা থাকবে, থাকবে অগ্রজদের প্রতি নিরবচ্ছিন্ন ভালোবাসা। তারাই পাবে সস্মানের শ্রেষ্ঠ মকুটটি। এ ব্যাপারে কারো সাথেই আমার দ্বি-মত নেই।
তবে বেরিয়ে আসবেন না, শুন্যতার সামান্যতম পূর্ণতা পাবে না, আমরা পাবো না জ্বল জ্বলে উজ্জল কোনো লেখককে, যার আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত হবো আমরা, সেই সাথে অনাগত প্রজন্ম- এ কেমন কথা?
ফেনানো প্যাচাল হলেও আমি বলতে চাই- আমরা পরিবর্তনে বিশ্বাসী, অবশ্যই তা অগ্রজদেরকে সাথে করে। সেই সাথে চাই- জীবনঘনিষ্ঠ, কালোত্তীর্ণ সৃষ্টিশীল একাধিক লেখক-লেখিকার সফল অনুপ্রবেশ। কিছুই না পারলেও আমার প্রকাশনা সংস্থা ‘মুন্নী প্রকাশন’ এ ব্যাপারে সহায়তার হাত প্রসারিত রাখবে সব ধরনের সীমাবদ্ধতা ডিঙ্গিয়ে।
মোবারক হোসেন
প্রধান নির্বাহী
মুন্নী প্রকাশন